আপনি কি রেশন গ্রাহক? আপনার নামে কী রেশন কার্ড আছে? তবে সতর্ক হয়ে যান। যদি সাবধান না হন আপনার উপর প্রতারকদের নজর পড়তে পারে। যেভাবে ডেবিট কার্ড বা ক্রেডিট কার্ডের কথা বলে ব্যাঙ্ক গ্রাহকদের প্রতারণা করা হয়। এখন রেশন গ্রাহকদেরও তেমন পথেই ফাঁদে ফেলে প্রতারণা করা শুরু হয়েছে। এই কারণে মুহূর্তের অন্যমনস্কতায় আপনি সর্বস্বান্ত হয়ে যেতে পারেন। তাই সময়ের মধ্যে সাবধান হয়ে যান।
এর আগে আমরা কী দেখেছি? এটিএম কার্ড বা ক্রেডিট কার্ডের মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার কথা বলে বা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের কেওয়াইসি আপডেট করতে হবে কাঠটি জানিয়ে হঠাৎ করেই গ্রাহকদের ফোন আসত। সাধারণত মহিলারা এই ধরনের ফোন করতেন। এছাড়া অনেক ক্ষেত্রে পুরুষরাও নিজেদের ব্যাঙ্ক কর্মী পরিচয় দিয়ে ফোন করে আধার নম্বর, প্যান নম্বর, মোবাইল নম্বরের মতো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে চাইত।
অনেক ক্ষেত্রে এটিএম কার্ডের নম্বর ও পিছনে থাকা সিভিসি নম্বরও জানতে চাওয়া হতো। এক সময় না বুঝতে পেরে ব্যাঙ্ক কর্মী বলে বিশ্বাস করে বহু মানুষ এই ফাঁদে পরে প্রতারিত হয়েছেন। তবে ব্যাঙ্ক থেকে অনেকবার সচেতনতা অভিযান চালানোর কারণে এখন অনেকেই সাবধান হয়েছেন। তাসত্বেও বয়স্ক মানুষদের এইভাবে ফাঁদে ফেলে প্রতারকেরা সাথে সাথেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খালি করে দিচ্ছে।
রেশন গ্রাহকদের সঙ্গেও অনেকটা এই ধরনের প্রতারণা শুরু হয়েছে। নিয়ম করে খাদ্য সরবরাহ বিভাগ রেশন গ্রাহকের তালিকা আপডেট করে। তাতে অনেকেরই নাম অনেক কারণে বাদ যায়। মূলত কোনও মানুষের আর্থিক পরিস্থিতির উন্নতি ঘটলে তাঁর নাম রেশন গ্রাহকের তালিকা থেকে বাদ হয়ে যায়।
এই বিষয়টাকেই সুযোগ হিসেবে কাজে লাগাচ্ছে প্রতারকরা। তারা খাদ্য সরবরাহ দফতরের রেশন গ্রাহকের নতুন তালিকা খুঁটিয়ে লক্ষ্য করছে। তারপর যার নাম বাদ পড়ে যাচ্ছে তাদেরকে ফোন করে পোণরই রেশন গ্রাহকের নথিভূক্ত করার প্রতিশ্রুতি দেয়।
সাথে সাথে ফোনে একটি SMS পাঠিয়ে বলছে ক্লিক করে জরুরি তথ্য পাঠাতে। বিপদের কেন্দ্রবিন্দু লুকিয়ে আছে ওই SMS এর মধ্যে। SMS এ থাকা লিঙ্কে টিপ দিলেই সাথে সাথেই আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সমস্ত জরুরি তথ্য চলে যাবে প্রতারকদের কাছে। এবং মিনিটের মধ্যেই খালি হয়ে যাবে আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট।
এছাড়াও যে সকল রেশন গ্রাহকদের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়েছে শুধু তাঁদের নয়, তালিকায় নাম থাকা গ্রাহকদেরও বহু ক্ষেত্রে এই ফাদে ফেলানো হচ্ছে। রেশন কার্ড আপডেট, রেশন-আধার লিঙ্কের কথা বলে এইরকমভাবে এসএমএস পাঠিয়ে তাতে থাকা লিঙ্কে ক্লিক করতে বলছে প্রতারকরা। বুজতে না পেরে এই ফাঁদে পা দিয়ে সাথে সাথেই বেশ কিছু মানুষ সর্বশান্ত হয়েছে।
এই প্রতারনা বন্ধ করতেই খাদ্য সরবরাহ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে একের পর এক প্রচার অভিযান শুরু হয়েছে। এরূপ কোনও এসএমএস-এ ক্লিক না করতে বলা হচ্ছে। সেই সঙ্গে খাদ্য সরবরাহ মন্ত্রক বলছে, তারা এইভাবে ফোন করে কোনও গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য জানতে চায় না। তাই এইরূপ ফোন আসলেই কথা না বাড়িয়ে সাথে সাথে লাইন কেটে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে বিষয়টি নিয়ে পুলিশের কাছে যাওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।